Table of Contents
Toggleঅতিরিক্ত ঘুম দূর করার উপায় নিয়ে আলোচনাঃ
ঘুম মানুষের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। আমাদের বয়সের উপর নিরর্ভর করে আমাদের ঠিক কতটা সময় ঘুমাতে হবে। একজন শিশু ও একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ঘুমের পরিমান একই হবে না কথনো। বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৬-৭ ঘন্টা ঘুমানো দরকার হয়।
এর একটু কম বেশি হলে অনেক বেশি সমস্যা হবে না কিন্ত আমাদের অনেকের অতিরিক্ত ঘুম এর অভ্যাস রয়েছে যার ফলে অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। আজকে অতিরিক্ত ঘুম দূর করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমাদের অনেকেরই দুপুরের খাবারের পর ঘুম ঘুম ভাব চলে আসে।
যদিও এটির একটা কারণ রয়েছে আমরা দুপুরে যখন খাবার গ্রহণ করি তখন আমাদের মস্তিষ্কে অক্সিজেন এর পরিমান হ্রাস পায় যার ফলসরূপ আমাদের ঘুম ভাব চলে আসে। কিন্তু এই বিষয়টি খুবই সাভাবিক একটি বিষয় এটি নিয়ে ভয় পাওয়ার কোন দরকার নেই।
নিদ্রাহীনতা যেমন শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর সেইভাবেই অতিরিক্ত ঘুম আমাদের জন্য ক্ষতিকর । যারা টানা ৯-১০ ঘন্টা ঘুমান তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা,ওজন বেড়ে যাওয়া, ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের মত বড় ধরনের অসুখও। স্লিপ অ্যাপনিয়া,হৃদযন্ত্রের সমস্যা,ডিপ্রেশন,থাইরয়েড এর কারনেও অতিরিক্ত ঘুম হতে পারে।
আবার আপনি যদি নিয়মিত কোন ওষুধ সেবন করেন সেই ওষুধের কারনেও ঘুম ঘুম ভাব চলে আসতে পারে। আপনার অতিরিক্ত ঘুম এর কারন সর্বপ্রথম খুজে বের করতে হবে। যদি শারীরিক কোন কারন খুজে না পান তাহলে কিছু নিয়ম মানলেই এই সমস্যার সমাধান পাওয়া সম্ভব হবে।
অতিরিক্ত ঘুম দূর করার উপায়
পানি পান করুন:
পানি আমাদের শরীরের একটি অপরিহার্য একটি পানিয়, যা ছাড়া আমরা কোন ভাবেই বেশি দিন টিকে থাকতে পারবো না। পানি পান করলে আমাদের কোষগুল প্রাণ ফিরে পায় এবং এটি অন্যতম অতিরিক্ত ঘুম দূর করার উপায় ।
যখন আপনার প্রচুর পরিমানে ঘুম ঘুম ভাব চলে আসবে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি পান করুন দেখবেন সাথে সাথে আপনার ঘুম চলে গেছে। একই সাথে দেখবেন পানি পান করলে মস্তিষ্ক নতুন করে কাজ করার শক্তি ফিরে পাবে। পড়তে বসলে আমাদের বেশি ঘুম পায় তখন একটু পানি খেয়ে নিলে দেখবেন পড়ার জন্য আবান নতুন শক্তি খুজে পেয়েছেন।
কারো সাথে কথা বলা:
আপনার যখন ঘুম ঘুম ভাব চলে আসবে আপনি যদি চুপ চাপ বসে থাকেন তাহলে কিন্ত কথনোই ঘুম ভাব কমবে না। তখন চেষ্টা করবেন আসে পাশে কেউ থাকলে তাদের সাথে ২-৩মি. কথা বলতে। তাহলেই দেখবেন ঘুম ভাব একদম চলে গেছে।
একটু হাঁটাহাঁটি করুন:
আপার কাজের ধরন যদি বেশি সময় বসে কাজ করা হয় তাহলে দেখবেন আপনার বেশি ঘুম পাবে আবার যেদিন বসে কম কাজ হয় তাহলে দেখবেন কম ঘুম আসবে। যারা চাকুরী করেন তারা আরো ভালো বুঝতে পারবে বিষয় গুলো। কাজের সময় যদি আপনার বেশি ঘুম ধরে তাহলে আপনি একটু হাঁটাহাঁটি করবেন। দেখবেন সাথে সাথে আপনার ঘুম চলে যাবে।
এক কাপ চা/কফি:
ঘুম দূর করার জন্য চা-কফি কার্যকর একটি পানীয়। কফিতে ক্যাফেন নামক একটি পদার্থ থাকে যা আমাদের মস্তিষ্ককে সজাগ রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে থাকে। কফি আমাদের শরীরের জন্যও বেশ ভাল।
আপনি যদি ছাএ ছাএী হয়ে থাকেন তাহলে আপনাদের প্রায়েই অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশুনা করতে হয় আর কিছু মানুষের পড়তে বসলেই ঘুম চলে আসে এই জন্য পড়াতে মনোযোগ দিতে পারে না। এইজন্য আপনি বাসায় চা/কফি বানিয়ে রাখতে পারেন যদি ঘুম ভাব আসে তাহলে এক কাপ খেলেই দেখবেন আপনার ঘুম একদম চলে গেছে।
চোখেমুখে পানি দিন:
আরো একটি কার্যকর উপায় হল চোখেমুখে ভালো ভাবে পানি দেওয়া। যদি আপনার ঘুম কোন ভাবেই না কমে তাহলে খুব ভালো ভাবে চোখে পানি দিতে হবে। চোখে পানি দেওয়া ভালো তার মধ্যে যদি ঘুম ভাব চলে যায় তাহলে তো আরো ভালো।
রুটিন মেনে চলা:
অতিরিক্ত ঘুম দূর করা নিয়ে অনেক কিছুই জানলাম তাছাড়া আমরা যদি একটা রুটিন ফলো করি তাহলে দেখবেন যে, প্রতিদিন ঐ নিদ্দিষ্ট সময়ে ঘুম চলে আসবে আবার নিদ্দিষ্ট সময়ে ঘুম ভেঙ্গে যাবে। এইটা একটা রুটিনে নিয়ে আসতে হবে।
দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমের অভ্যাস বাদ দিতে হবে।এই অভ্যাস আপনার সমস্ত রুটিন বিফল করে দিতে পারে। দুপুরে ঘুম আসলে উপরের সব কিছু ফলো করতে পারেন।
স্বাস্থ্যকর খাবার:
অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার আমাদের যেমন শরীরের জন্য উপকার তেমনি অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার তন্দ্রাচ্ছন্ন এবং অলস করে ফেলে যার ফলে আমাদের বেশি বেশি ঘুম পায়। আমাদের সবার প্রচুর পুষ্টি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেমন: ফল,শাকসবজি,ডাল ইত্যাদি।
একটানা কোন কাজ করা যাবে না:
আপনি যখন একটানা এবং অনেক লম্বা সময় নিয়ে কাজ করেন তখন অনেক বেশি ঘুম চলে আসে। কাজের মধ্যে অল্প বিরতি নেওয়াও অনেক জরুরী যখন দেখবেন প্রচুর ঘুম আসতেছে। পড়ার সময় অথবা কাজের সময় ৫-৬ মি. এর একটি বিরতি নিলে ঘুমের সমস্যা কম দেখা যাবে।
চুইংগাম খেতে পারেন
চুইংগাম দাঁতের জন্য অনেক খারাপ কিন্তু চুইংগাম খেলে মুখ অনবরত নরতে থাকে যার কারনে আপনার ঘুমের ভাব আসবে না। ঘুম কাটাতেও অনেক সাহায্য করে থাকে।
গান শুনতে পারেন
যদি কোন ভাবেই নিজের ঘুমকে কন্ট্রল করতে না পারেন তাহলে ২-১ টা ভালো গান শুনতে পারেন গান শুনলে ঘুম চলে যাবে এবং আপনার মনও ফ্রেস হয়ে যাবে। ঘুম দূর করার উপায় হিসেবে এইটা ফলো করলে উপকার পাবেন।
উপরক্ত পরামর্শগুলো আপার সমস্যা অতিরিক্ত ঘুম দূর করার উপায় সাধন করতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস। যদি আপনার কোন ধরনের মতামত থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাতে পারেন।