প্রতি মাসে গুগোলে প্রচুর পরিমানে মানুষ খোজ করে মাএ ৭ দিনে লম্বা হওয়ার উপায় কি। কিন্তু আপনি যত চেষ্টাই করুন না কেন ৭ দিনে লম্বা হতে পারবেন না। কিন্তু বেশ কিছু টেকনিক,উপায় এবং ব্যায়াম সম্পূর্কে আলোচনা করবো যার মাধ্যেমে আপনি প্রাকৃতিক উপারে কিছুটা লম্বা হতে পারবেন।
মানুষির উচ্চতা নিরভর করে জেনেটিক বিষয়ের উপর।, পিতা ও মাতার সমস্টিগত উচ্চতার গড় উচ্চতা নিরভর করে আপনি কতটুক লম্বা হবেন। যেমন ধরুন বাবা ৬ ফুট, মা ৫ ফুট হলে জেনেটিক্যালি সন্তান সাড়ে ৫ ফুট + পুষ্টি দ্বারা ২০-৪০% এর জন্য যেটুকু বৃদ্ধি হয়। ভালো পুষ্টি না পেলে উচ্চতা বাড়বে না।
Table of Contents
Toggleমাএ ৭ দিনে লম্বা হওয়ার উপায় নিয়ে কিছু কথা
লম্বা হওয়ার জন্য সব থেকে বেশি দরকার তা হলো লম্বা হওয়ার হরমোন যার নাম গ্রোথ হরমোন বা সোমাটোট্রপিন (Somatotropine)। আমাদের ছোট বেলাতে এই হরমোন সব থেকে বেশি থাকে তারপর অল্প অল্প করে কমতে থাকে। যার যত বেশি গ্রোথ হরমোন তার লম্ব হওয়ার চান্স তত বেশি হয়ে থাকে।
গ্রোথ হরমোন বা বৃদ্ধি হরমোনের মাধ্যমে আপনার শরীরের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রিত হয় থকে। এই হরমোন গুলো আপনার শরীরের কী পরিমাণ তৈরী হবে অথবা কী মাত্রায় নিঃসরণ হবে, তা নির্ধারণ হয় আপনার জিনের মাধ্যমে। আর এই জিন আপনি পেয়ে থাকেন আপনার বাবা মা মাধ্যেমে। যদি আপনার বংশে উচ্চতার পরিমান কম থাকে তাহলে আপনার লম্বা হওয়ার সুযোগ কমে যাবে হয়তো কিছু কিছু সময় অন্য রকম হতে পারে বিষয়টি। কারন আপনি দেখবেন কারো মা-বাবা দুইজন লম্বা না কিন্তু তাদের সন্তান অনেক লম্বা। মানুষের উচ্চতা কম এইটাকে নিচু/নিজে ছোট হওয়ার কোন বিষয় না কারন এক এক মানুষ এক এক রকম হবে এইটাই স্বাভাবিক তাই নয় কি?
প্রাকৃতিক নিয়মে ৫ -৬ ইঞ্চি লম্বা হওয়ার উপায় গুলো চলুন জেনে নেই
নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে দূরে থাকুন
যারা নেশা জাতিয় দ্রব্যে আসক্ত তাদের কিন্তু অন্যদের তুলনায় সব ধরনের হরমোন অনেক কম যা নেশা তো এমনিতেই দেহের জন্য ক্ষতিকর তার মধ্যে হরমোন দ্রুত গতিতে কমতে থাকে। যদি আপনার কোন ধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করে থাকেন তাহলে আজকে থেকেই ধূমপান, মদ ও নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
সুষম খ্যাদ্যাভ্যাস গঠনে
শরীর যদি ফিট না থকে তাহলে লম্বা মানুষকেও ছোট লাগে। তাই নিজের ওজন অনুযায়ী আপনার ওজন ঠিক আছে কিনা সেইটি নিশ্চিত করুন। যদি ঠিক না থাকে তাহলে সুষম খ্যাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলুন। প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি গ্রহণ করুন যেমনঃ মুরগীর মাংস, মাছ ও দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর লিন প্রোটিন থাকে তেমনি এই খাবার গুলো বাজারে সহযেই পাওয়া যায়। এছাড়া শরকরা যুক্ত খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন যেমনঃ আলু, ভাত। দুধ, দই এর মাধ্যমে প্রচুর ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় যা দেহের জন্য ভালো।
মানসিক চাপমুক্ত করুন
মানসিক চাপ খুবই খারাপ একটি জিনিস যা আমাদের প্রতিদিনের কাজের পাশাপাশি দেহের উপরও প্রভাব ফেলে। ইতিপূর্বেই আলোচনা করেছি যে মানুষের লম্বা হওয়া দেহের হরমোনের উপর নিরভর করে থাকে তাই আপনি যদি সব সময় কোন বিষয় নিয়ে মানসিক ভাবে অনেক চাপে থাকেন তাহলে হরমোন তৈরিতে বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। তাই সব সময় চেষ্টা করতে হবে যেন মানসিক চাপমুক্ত থাকা যায়।
আরো পড়ুনঃ আমি মোটা হবো কিভাবে | সাত দিনে মোটা হওয়ার ১০টি সহজ উপায়
পর্যাপ্ত ঘুম
অতিরিক্ত ঘুম যেমন খারাপ তেমনি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমানো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারন ঘুম অপর্যাপ্ত হলে আপনার ওদিক কোন কাজে মনোযোগ আসবে না। ঘুম আমাদের শরীর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। যারা এখন ২০ বছরের কম বয়সের আছেন তারা প্রতিদিন ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো চেষ্টা করুন । পরিমাণমতো ঘুমালে আপনার শরীরে হরমোন তৈরি করতে সাহায্য করবে এবং লম্বা হতে সময় পাবে।
স্ট্রেচিং
আমরা যারা অতিরিক্ত বসে কাজ করি প্রতিদিন। বসে থাকতে থাকতে আমাদের অনেকের মেরুদণ্ড ঝুঁকে যায়। আবার অনেকের অনেকের ঘাড় আর কাঁধ সামনের দিকে ঝুঁকে যায়। ফলে উচ্চতা কম দেখার সাথে সাথে নিজের ফিটনেসও খারাপ দেখায়। তাই নিয়মিত ঘাড়, কাঁধ, মেরুদণ্ডের স্ট্রেচিং করুন এবং পুল আপ বার থেকেও কয় এক মিনিট করে ঝুলে থাকতে পারেন। এই ব্যায়ামটি অনেক কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।
দাঁড়ানোর ভঙ্গিমা
অনেকেই নিজের অজান্তেই ঝুঁকে দাঁড়ান কিংবা ঝুঁকে হাঁটেন যা করা একদমি অনুচিত। এমন বাজে অভ্যাস যাদের আসে তারা বাদ দিয়ে দিন। প্রথমে একটি দেয়ালে পিঠ টানটান করে দাঁড়ান তারপর কাঁধ দুটি পিছিয়ে নিয়ে দেয়ালে ঠেকাতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে বেশ কয়েকবার এটি করুন।
লম্বা হতে কিছু কার্যকরী ব্যায়াম ও টিপস
১. প্রথমে আপনি মেঝেতে উপুর হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর এবার হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে নিজের শরীরের উপরের অংশটি আস্তে আস্তে তুলতে থাকুন । এবার মেরুদন্ড বাঁকা করে মাথাটা পেছনের দিকে যতটা পারা যায় বাঁকান। দেখবেন যেন হাঁড়ে অনেক বেশি প্রেশার না পরে।
২. এখন হাঁটু ভাঁজ করে, হাতের তালু ও হাঁটুতে ভর দিয়ে বিড়ালের মত হোতে হবে (শুনতে অন্যরকম রাগতে পারে)। তারপর মাথা উপরের দিকে বাঁকিয়ে পিঠ নিচের দিকে বাঁকিয়ে নিন নিজের সুবিধা অনুযায়ী। এখন নিজের মাথা নিচু করে মেরুদন্ড বা পিঠ উপরের দিকে বাঁকা করুন যতটুক পারেন। ৭-৮ সেকেন্ড পর পর এভাবে কয়েকবার করুন আশা করি ভালো ফলাফল পাবেন।
৩. আবার মেঝেতে বসুন এবং দু পা দুদিকে ছড়িয়ে দিন। এরপর ডান হাঁটু তে নাক লাগানোর চেষ্টা করুন, হাঁটু ভাঁজ না করে যতটা পারা যায় তত টা করুন প্রথম প্রথম হয়তো পারবেন না কিন্তু হতাশ হওয়া যাবে না । এই ভাবে ৭-৮ সেকেন্ড থাকুন এভাবে তারপর আবার বা পায়ে একই ভাবে চেষ্ট করুন।
৪. এখন উপুর হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর হাতের তালু এবং পায়ের পাতার উপর ভর দিয়ে শরীর উপর দিকে বাঁকিয়ে উঁচু করে তুলে ধরুন ধিরে ধিরে মাথা নিচে রেখে খেয়াল রাখবেন কোন ব্যাথা না লাগে। এভাবে ৭-৮ সেকেন্ড থাকুন।
৫. আবার মেঝেতে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর হাটু ভাঁজ করে পায়ের গোড়ালী নিতম্বের কাছা কাছি নিয়ে আসতে হবে। এবং গোড়ালী হাত দিয়ে ধরতে হবে। এরপর কোমড় সহ নিতম্ব উপরের দিকে উঠাতে হবে খেয়াল রাখতে হবে যেন মাথা নিচে থাকে। এভাবে ৭-৮ সেকেন্ড থাকুন।
উপরিক্ত আলোচনা আসা করছি ভালো লেগেছে সবসময় মনে রাখবেন যে মানুষের শারীরিক গঠনটাই মূখ্য নয়। মানুষ হিসেবে আপনি ভালো হওয়াটাই বেশি মূখ্য।
ছবি সংগৃহীত