পড়াশোনা আমাদের ছোটবেলায় একটি আতঙ্কের ছিল অনেকের কাছে। পড়াশোনা করতে হবে এটি শুনলেই যেন দৌড়ে পালাতে ইচ্ছা করত। কিন্তু পড়াশুনা করাটা যেমন কঠিন পড়াশোনার ফলে মানুষকে তেমনই সম্মান এনে দিতে সহায়তা করে।
কিন্তু যদি আপনার মধ্যে তো বিশ্বাস না থাকে তাহলে পড়াশোনা করাটা অনেকটাই অসম্ভব হয়ে যায়। জোর করে আসলে ভালো কিছু করা সম্ভব হয় না।
আজকে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করব আশা করছি এই আর্টিকেলটি করলে আপনার পড়াশোনার মনোযোগ অনেকটাই বৃদ্ধি করতে পারবে যা আপনার পরবর্তীতে পরীক্ষার ক্ষেত্রে নিজের জীবনে অনেক ভালোমতো প্রয়োগ করতে পারবেন।
আমাদের দেশে অনেক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে যারা পড়তে বসলেই তাদের ঘুম ভাব চলে আসে, মাথাব্যথা করে, অনেকে তো ক্ষুধা লাগে একেকজনের একেক রকমের সমস্যা শুরু হতে থাকে।
পড়াশোনা করতে বসেছেন কিন্তু আপনার যদি মনোযোগ না থাকে তাহলে আপনি সারাদিন বই নিয়ে বসে থাকবেন না পড়াশোনা উল্টো আরো সময় নষ্ট। যাদের এমন পড়াশোনায় মনোযোগ নিয়ে সমস্যা রয়েছে আজকে তাদের জন্য ৭টি উপায়ে এবং ৭টি কার্যকরী উপদেশ নিয়ে আলোচনা করব।
Table of Contents
Toggleপড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায়
যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে মনোযোগ ধরে রাখা অনেক জটিল একটি প্রক্রিয়া সেক্ষেত্রে আপনার পড়াশোনায় যদি মনোযোগ না আসে তাহলে খুবই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
একই সাথে পড়াশোনা করে এর মধ্যে কিছু ছাত্রছাত্রী অনেক ভালো রেজাল্ট করছে আবার কিছু ছাত্র-ছাত্রী অনেক কম রেজাল্ট পাচ্ছে এটার কারণ কি?
যারা অনেক ভাল রেজাল্ট করছে আপনি খোঁজ নিয়ে দেখলে দেখবেন তারা অনেক মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করার চেষ্টা করে এবং আপনিও যদি মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করে আত্মীয় তাদের থেকে ভালো রেজাল্ট করতে পারবেন। জেনে নেওয়া যাক উপায়
মনস্থির করুন
পড়তে বসলেই আমাদের মনের মধ্যে অনেক ধরনের চিন্তাভাবনা করতে থাকে সেই চিন্তাগুলোকে কোনভাবে পাত্তা দেওয়া যাবে না। আপনি যখন পড়তে বসবেন আপনার প্রয়োজনীয় সবকিছু হাতের কাছাকাছি রাখার চেষ্টা করুন যাতে বারবার চেয়ার থেকে উঠতে না হয়।
হাতের কাছে মোবাইল অবশ্যই রাখবেন না মোবাইলটি যত সম্ভব ধরে রাখার চেষ্টা করুন। যদি খুব বেশি সমস্যা না হয় তাহলে মোবাইল বন্ধ করে রাখলে আরো ভালো হবে। পড়তে বসার আগে ১০ থেকে ১৫ মিনিট স্থির করুন যে আজকে যত সময় করব সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করব।
টিউশনি করা বা শিক্ষকতা করা
নিজের জ্ঞানকে আরো বৃদ্ধি করার জন্য টিউশনি করানো অথবা শিক্ষকতা দারুন একটি উপায় বলে আমি মনে। করি কারণ আপনি যে বিষয়ের উপর টিউশনি করাবেন আপনি প্রতিনিয়ত সে বিষয়টি প্র্যাকটিস করতে থাকতেন যার ফলে সেই বিষয়গুলি আপনার জন্য পানির মতো সহজ হয়ে যাবে।
আপনি যে ক্লাসে পড়েন চেষ্টা করবেন তার থেকে এক শ্রেণী নিচে বা দুই শ্রেণী নিচে কোন স্টুডেন্টকে পড়ানোর জন্য এতে আপনারই উপকার হবে। যেমন আপনি যদি ইংরেজিতে দুর্বল হন তাহলে চেষ্টা করবেন ইংরেজির ওপর কাউকে শিক্ষাদান করার জন্য আপনি এটি করতে পারলে আপনার নিজের ইংরেজি প্র্যাক্টিসের পাশাপাশি আপনার ওই বিষয়টির ওপর চর্চা থেকে যাবে।
নতুন নতুন ধারণা মাঝে সংযোগ করার চেষ্টা করুন
আপনি যখন নতুন কিছু শিখবেন বা জানবেন সেই তথ্যগুলো আপনার বর্তমানে পরিচিত কোন তথ্য অথবা ধারণার সাথে মিলানোর চেষ্টা করুন। এটা সুবিধা হচ্ছে পরীক্ষাতে তখন আপনার সেই সমস্ত তথ্য ভুলে যাওয়া আশঙ্কা অনেক অংশে কমে যাবে এবং পরতেও সুবিধা হবে।
তথ্যের ধরন
যে কোন বিষয়ে পড়ার সময় সে তথ্য বোঝার চেষ্টা করুন। যেমন যে তথ্যটি দেওয়া আছে সেই তথ্যটি বিজ্ঞানের কোন তথ্য, রাজনৈতিক কোন তথ্য, ঐতিহাসিক কোন তথ্য, দেশাত্মবোধক কোন তথ্য, এই সব কিছু বুঝে বা যে তথ্যটি হোক না কেন তা মুখস্থ না করে ভালোমতো বুঝে সেগুলো পড়ার চেষ্টা করুন।
কোন একটি বিষয়ে মুখস্থ করলে আপনি একটা সময় পর ঠিকই ভুলে যাবেন কিন্তু সে বিষয়টি যদি আপনি ভালোমতো বুঝে পড়েন তাহলে সেটি ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম।
মস্তিষ্কের ওপর চাপ প্রয়োগ না করা
আমরা অনেকেই মনের বিরুদ্ধে বা জোর করে পড়তে বসি।কিন্তু প্রচলিত একটি কথা আছে জোর করে কিন্তু ভালোবাসা ও পাওয়া যায় না ঠিক তেমনি জোর করে বা মস্তিষ্কের ওপর চাপ প্রয়োগ করে পড়াশোনা হয় না। প্রথমে আপনার মাইন্ড সেট করতে হবে যে পড়াশোনা করে আমার ভালো কিছু করতে হবে।
এবং আপনার যদি কোন বিষয়ে মন খারাপ অথবা কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করেন সেটি আগে দূর করুন তারপর অন্য মনোযোগ নিয়ে পড়াশোনা করুন ।চেষ্টা করবেন একটানা দীর্ঘ সময় না পড়ে মাঝেমধ্যে কিছুটা সময় দেওয়ার জন্য।
যেমন আপনি যদি ৩০ মিনিট পড়েন তাহলে পাঁচ মিনিটের অতি নিতে পারেন অথবা এক ঘণ্টা পরলে ১০ মিনিটের একটি বিরতি নিতে তাহলে মস্তিষ্কের উপর খুব একটা চাপ হবে না এবং যা পড়বেন তা দীর্ঘ সময় মনেও থাকবে। একটা বিষয়ের ওপর পড়ার পর সেটি এক দুই ঘন্টা পর পুনরায় আরেকবার করুন এতে করে সে বিষয়টি আপনার মাথার মধ্যে খুব ভালো মতো বসে যাবে।
একাডেমিক বয়স আছে অন্যান্য বই পড়ুন
শুধুমাত্র একাডেমিক বই পড়তে পড়তে আপনার মধ্যে এক রকম বিরক্ত চলে আসতে পারে। তাই মাঝে মধ্যে অন্য ধরনের বই পড়ার চেষ্টা করতে পারে হতে পারে কোন উপন্যাস, হতে পারে কবিতার বই, হতে পারে গল্পের বই।
মাঝেমধ্যে ভিন্নতা থাকলে তারপর আপনার একাডেমিক বই পড়তে তখন আর বিরক্ত লাগবে। অন্যান্য বই পড়লে আপনার মধ্যে বই পড়ার একটি অভ্যাস গড়ে উঠবে। যা আপনার ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে।
পড়ার জন্য নোট তৈরি করুন
নোট করে পড়ার অভ্যাস খুবই কার্যকর একটি উপায়। এতে আপনার অনেকটা সময় বেঁচে যাবে। আপনি কোন সময় কোন বিষয়টি পড়বেন তা যদি আগে থেকেই আপনার রুটিন করা থাকে তাহলে আপনার পড়াতে যেমন উৎসাহিত হবে এমনই আপনি একটি রুটিনের মধ্যে চলে আসবেন।
যার ফলস্বরূপ আপনার কোন বিষয়টি বেশি পড়া উচিত কোন বিষয়টি একটু কম করলেও হবে তা আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন। আপনার পরিচিত অনেকে নোট করে পড়ার জন্য থেকে অনেক অংশেই এগিয়ে আপনি।
উপরে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনি যদি এই দশটি পয়েন্ট খুব ভালো মতো ফলো করেন তাহলে আশা করছি আপনি আগের থেকে অনেক বেশি মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করতে পারবেন যা আপনার ভবিষ্যতে পড়াশুনা এবং রেজাল্টের জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সহায়তা করবে।
আর্টিকেলটি কেমন লাগলো তা আপনি কমেন্ট করে জানাতে পারেন আপনার পরিচিত কাউকে শেয়ার করে দিতে পারেন। যদি অন্য কোন বিষয়ের উপর জানতে চান তাহলে সে বিষয়টি কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন।
ছবি সংগৃহীত
আরো পরুনঃ জন্ডিস হলে কি স্যালাইন খাওয়া যাবে কি এবং জন্ডিস হলে করনীয়